Header Ads

এশায়েত সম্মেলন ক্রোড়পত্র- ২০১২

২৮শে জানুয়ারী ২০১২ রোজ শনিবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ চত্বর,পল্টন, ঢাকায় জশনে জুলুশে ঈদে মিলাদুন্নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লামা উপলক্ষে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলন-২০১২ এর বিশেষ ক্রোড়পত্র মোখলেছ বান্দাগণের মহামিলন, জামানার গাউছুল আজমের এশায়াত সম্মেলন যাবতীয় প্রশংসা, গুণকীর্তন ও শোকর মহান আল­াহ পাকের জন্য, অসংখ্য ছালাত ও সালাম রাহমাতুলি­ল আলামিন মুহাম্মাদুর রাসূলুল­াহ ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামা, তাঁর পরিবারবর্গ, সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এবং নেক্কার বান্দাগণের উপর। জশ্নে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামার এ মাসে মহান প্রভুর দরবারে মহান মোর্শেদ, আওলাদে মোস্তফা, খলীফায়ে রাসূল (দঃ) হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ গাউছুল আজমের হায়াতে খিজরীয়া কামনা করছি। মানব সভ্যতা আজ আধুনিক থেকে আধুনিকতার দিকে এগিয়ে চলছে, মানুষ দিন দিন জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা-দীক্ষা ও অর্থ-বিত্তের দিকে অগ্রসর হ‛েছ। একদিকে মসজিদ, মাদ্রাসা, খানাকা, ওয়াজ-নছিহত, বায়আত, ইসলামী বিপ্লব ও সভ্যতার শ্লোগানে আকাশ-বাতাস কম্পিত হ‛েছ। অন্যদিকে মারামারি, হানা-হানি, হিংসা-বিদ্বেষ, বেহায়াপনা-উলঙ্গপনা, অ‣নসলামিক সং¯‥ৃতিতে সমাজ কলুষিত হতে চলছে মারাত্মকভাবে। প্রিয় রাসূল ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল-ামার অমীয় বাণী ‘এমন এক সময় আসবে নাম স্বর্বস্ব ইসলাম থাকবে, রছম স্বর্বস্ব কোরআন থাকবে।’ মুসলমানদের এমন ক্রান্তি কালে বাংলার বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম জেলা, রাউজান উপজেলার ‘কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ’ বিশ্বের মুসলিম যুব সমাজকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে কোরআন-সুন্নাহ ও ইসলামের সঠিক পথ ছিরাতুল মোস্ত াকিমের দিকে। এ দরবারের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহান মোর্শেদ, আওলাদে মোস্তফা, খলীফায়ে রাসূল (দঃ) হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল­ুহুল আলী ছাহেব। যিনি ১৯২৩ সালে বার আউলিয়ার পূণ্যভূমি বন্দর নগরী চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী রাউজান উপজেলা, কাগতিয়া গ্রাম, মাইজপাড়ার ‘ক্সছয়্যদ বাড়ীতে’ আওলাদে রাসূল (দঃ), হযরত শায়খ ‣ছয়্যদ বখতিয়ার মাহী ছাওয়ার (রাঃ) এর বংশধর হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ লাল মোহাম্মদ কাতেব আল আরাবী (রাঃ) এর অন্যতম আওলাদ হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ ক্বাজী নূর আহমদ (রাঃ) এর ঔরশে জন্মলাভ করেন। তাঁর মোহতারাম আব্বাজান এ মহান মনিষীর নাম রাখেন ক্সছয়্যদ তফজ্জল আহমদ। যাঁর নছল শরীফ আওলাদে রাসূল (দঃ) হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ লাল মোহাম্মদ কাতেব আলআরাবী (রাঃ)-র বংশ পরস্পরায় রাহমাতুলি­ল আলামীন হযরত নবী করিম ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামার নছল মোবারকের সাথে মিলিত হয়। শিক্ষা জীবন এ মহান মনিষী শিশুকালে মোহতারাম আব্বাজানকে হারিয়ে প্রিয় নবী ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামার ওয়ারিশ বেশে এতিম সেজে জীবনের সূচনা করেন। তাঁর মোহতারামা আম্মাজানের নিকট প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর বর্তমান কাগতিয়া কামিল এম. এ. মাদরাসায় তৎকালীন যুগশ্রেষ্ঠ আলেম, প্রখ্যাত অলী, আশেকে রাসূল (দঃ) হযরত ক্সছয়্যদ র‚হুল আমিন (রাঃ) এর নিকট কোরআন, হাদীস, ফিকাহ, দর্শন ও অলংকার শাস্ত্রসহ দাখিল স্ত রের জ্ঞান-হেকমত অর্জন করেন। পরবর্তীতে তৎকালীন দেশখ্যাত প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম দার‚ল উলুম কামিল মাদ্রাসা থেকে ১৯৪৫ সালে আলিম, ১৯৪৭ সালে ফাযিল এবং ১৯৪৯ সালে ‘মমতাজুল মুহাদ্দেসিন’ সনদ অর্জন তথা টাইটেল (কামিল এম. এ) পাশ করেন। তৎকালে হাতে-গোনা কয়েকজন টাইটেল (কামিল এম. এ) পাশ করা আলেম থাকাতে আপামর জনতা তাকে ‘টাইটেল সাহেব হুজুর’ বলে ডাকতেন। তিনি টাইটেল পাশ করে কাগতিয়া কামিল এম. এ. মাদরাসায় আরবী প্রভাষক পদে যোগদান করে পর্যায়ক্রমে অধ্যক্ষ পদ হতে অবসর গ্রহণ করেন। শিক্ষা-দীক্ষা, দ্বীনি তা’লিম, ওয়াজ-নছিহত, আচার-আচরণে অতুলণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী হওয়ায় আপামর জনতা ১৯৫৪ সাল থেকে তাঁকে ‘কাগতিয়ার বড় হুজুর’ বলে জানেন ও উ‛চস্তরের সুফী সাধক এবং যুগশ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বীন হিসেবে জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকলে ভালবাসেন ও শ্রদ্ধা করেন। অন্যদিকে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি ১৯৪৫ সালে আলিম সমাপনী পরীক্ষার পর ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত অলীয়ে কামেল, শায়খুত তরিক্বত হযরত হামেদ হাছান আলভী আজমগড়ী (রাঃ) এর অন্যতম খলীফা তৎকালীন যুগশ্রেষ্ঠ পীরে তরিক্বত, খাজায়ে বাঙ্গাল, কুত্বুল এরশাদ, হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ হাফেজ মুনির উদ্দীন (রাঃ) এর হাতে ইলমে তরিক্বত শুর‚ করেন। এ মহান মনিষী এমন তাকওয়াবান, এবাদতগুজার, রেয়াজতকারী এবং ইলমে বাতেনে তেজস্বী ব্যক্তিত্ব ছিলেন যে, সাধারণ ইঙ্গিতে আপন পীর ছাহেবের মর্মকথা বুঝতেন এবং আয়ত্ত করতে সক্ষম হতেন। যার ফলশ্র‚তিতে মাত্র ৯ বছরে ইলমে তরিক্বতের সব স্তর অতিক্রম করে ১৯৫৪ সালে তরিক্বতের খেলাফত লাভ করেন। তরিক্বতের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় আল­াহ তায়ালা ও তাঁর প্রিয় হাবীব ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামার পূর্ণ অনুসরণ ও অকৃত্রিম ভালবাসায় ১৯৯৬ সালে সুস্বপ্নে অলে․কিকভাবে প্রিয় রাসূল ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামার পক্ষ হতে ‘তাজে গাউছিয়্যত’ লাভ করে ‘যুগের গাউছুল আজম’ পদে ভূষিত হন এবং ২০০৩ সালে ওমরা পালন শেষে রওজা শরীফে নবী করিম (দঃ) এর যিয়ারতকালে জাগ্রত অবস্থায় অলে․কিকভাবে প্রিয় রাসুল ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামার হাত মোবারকে বায়আত হয়ে ‘খলীফায়ে রাসূল’ এর মর্যাদা লাভ করেন, যা বুশরা (সু-স্বপ্ন) দ্বারা প্রমাণিত (বিস্তারিত জানতে আমাদের প্রকাশিত ‘খলীফায়ে রাসূল’ নামক বইটি পড়–ন)। কোরআনের শাশ্বত বাণী-‘তাঁদের (আল­াহর অলীগণের) জন্য দুনিয়া ও পরকালে বুশ্রা থাকবে’। আর প্রিয় রাসূল (দঃ) এর বাণী-আমার পরে নবুয়্যত তথা ওহী নাযিল হবেনা, কিন্তু মুবাশ্যিরাত থাকবে। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন-এয়া রাসূলাল­াহ ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম! মুবাশ্যিরাত কি? তিনি বললেনসুস্বপ্ন, যা কোন মু’মিন বান্দা দেখেন বা এক মু’মিন সম্পর্কে আরেক মু’মিনকে দেখানো হয়। প্রিয় রাসূল ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামা আরো এরশাদ করেন-সুস্বপ্ন হ‛েছ নবূয়্যত তথা ওহীর ছেচলি­শ ভাগের এক ভাগ। এ মহান মনিষীর আধ্যাত্মিক মিশন মহান মোর্শেদ, আওলাদে মোস্তফা, খলীফায়ে রাসূল (দঃ) হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল­ুহুল আলী ছাহেব শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ। প্রিয় রাসূল ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামার অমীয় বাণী-আল-াহ তায়ালা প্রত্যেক শতাব্দীর মাথায় এমন একজনকে প্রেরণ করেন যিনি দ্বীনকে সং¯‥ার করেন। প্রিয় রাসূল ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামার বাণী মোতাবেক মুসলিম বিশ্ব উম্মাহ্র জন্য এক আধ্যাত্মিক রেনেঁসা হিসেবে আবির্ভূত হলেন মহান মোর্শেদ, আওলাদে মোস্তফা, খলীফায়ে রাসূল (দঃ), হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল­হুল আলী। নিম্নে তাঁর আধ্যাত্মিক কর্মপরিক্রমার কিঞ্চিত বিবরণ দেয়া হলো- কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ তরিক্বতের আসল রূপকে বিকৃত করে কিছু অসাধু ব্যক্তি যখন তরিক্বতকে সুশীল সমাজের নিকট হাস্যকর হিসেবে পরিণত করছে ঠিক তখনই তরিক্বতের বাস্তব সোনালী শাশ্বত রূপ নিয়ে এ মহান মনিষী প্রতিষ্ঠা করলেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ। ১৯৫৪ সাল থেকে এ দরবারে প্রতি বৃহস্পতিবার বাদে নামাজে আছর আধ্যাত্মিক পদ্ধতিতে ফয়জে কোরআন প্রদান, বাদে নামাজে মাগরিব তাওয়াজ্জুহ দিয়ে লতায়েফ (ক্বলব, র‚হ, সির ইত্যাদি) জারির মাধ্যমে আত্মশুদ্ধিকরণ, বাদে নামাজে এশা জিক্র ও ছালাতসালাম। প্রতি জুমাবার কোরআন-হাদীসের আলোকে নূরানী বয়ান ও ফয়জে কোরআন প্রদান। প্রতি রবিবার বাদে নামাজে মাগরিব পৃথিবীর যে কোন স্থানে বসা মহিলা তরিক্বতপন্থীদেরকে তাওয়াজ্জুহ বিল গায়েবের মাধ্যমে ছবক প্রদান। আর প্রতি বছর ১১ই রবিউল আওয়াল দিবাগত রাত জশ্নে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামা, ২৬ই রজব দিবাগত রাত পবিত্র মি’রাজুন্নবী ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামা, ৯ই মুহররম দিবাগত রাত শোহাদায়ে কারবালা স্মরণে পবিত্র আশুরার মাহফিল, ১৪ই শাবান দিবাগত রাত পবিত্র শবে বরাতের মাহফিল, ১০ই রবিউস সানি দিবাগত রাত পবিত্র ফাতেহায়ে এয়াজদাহুম ও ৩রা রমজান ঐতিহাসিক খতমে কোরআন মাহফিল। এসব মাহফিলে কোরআন-হাদীসের আলোচনা, তরিক্বতের বয়ান, শরীয়তের মাছআলা মাছায়েল, প্রিয় নবী ছাল­াল­াহু আলাইহি ওয়া ছাল­ামার শান-মান বয়ান, তাওয়াজ্জুহ প্রদান, ফয়জে কোরআন, বায়আতকরণ, নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে তরিক্বতের আধ্যাত্মিক কর্মসূচী সম্পন্ন করা হয়। বিশেষ করে খতমে কোরআন মাহফিলে হাজার-হাজার খতম কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করা হয়। মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ মানব সভ্যতার মডেল প্রিয় রাসূল ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামার ‘হিলফুল ফুযুল’-এর অনুসরণে তিনি ১৯৮৩ সালে গঠন করেন অরাজ‣নতিক তরিক্বতভিত্তিক আধ্যাত্মিক সংগঠন ‘মুনিরীয়া তবলীগ ও যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ’ এবং বেলায়তের কন্ঠে ডাক দিলেন-‘হে যুবক! নামাজ পড়, রোজা রাখ, নবী করিম (দঃ) এর উপর দরূদ পড়, মাতৃভূমি শান্ত কর’। এ কমিটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল আধ্যাত্মিক চেতনা বিকাশের মাধ্যমে বিপদগামী যুব সমাজকে ছিরাতুল মোস্তাকিমের দিকে ধাবিত করে আকায়েদে আহ্লে সুন্নাত এবং আ’মালে সালেহার উপর অটল রাখা, যুব সমাজকে ক্সনতিক অবক্ষয় থেকে পরিত্রাণ দেয়া, আমর বিল মার‚ফ তথা সৎ কাজের আদেশ এবং নাহি আনিল মুনকার তথা অসৎ কাজ থেকে বারণ করা, অশ্লীল ও বেহায়াপনা থেকে সমাজকে রক্ষা করা এবং প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ সুনিশ্চিত করা। উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে সামনে রেখে এ মহান মনিষীর নির্দেশে দেশ, জাতি ও মিল­াতের কল্যাণে এ কমিটি বাস্তবায়ন করে থাকে বিভিন্ন ধর্মীয় মাহফিল। ক) মসজিদ মাহফিলঃ হাদীসে পাকে রয়েছে মসজিদের সাথে যার আত্মিক সম্পর্ক থাকবে সে কেয়ামতের ময়দানে আল­াহর আরশের ছায়ার নিচে স্থান পাবে। তাই মুসলিম মিল­াতকে নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত, দরূদে মোস্তফা, সহীহ ও একনিষ্ঠভাবে ইবাদতের তালিম দেয়ার জন্য তিনি প্রবর্তন করলেন ‘মসজিদ মাহফিল’। খ) এশায়াত সেমিনারঃ আজ সুশীল সমাজের কন্ঠে ¯‥ুল, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্সনতিক শিক্ষাকে পাঠ্যভূক্ত করার দাবি উঠছে। অথচ ১৯৮৩ সাল থেকে ¯‥ুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্র সমাজকে ক্সনতিক চরিত্রে চরিত্রবান, তরিক্বত গ্রহণ করে কোরআন সুন্নাহ ভিত্তিক জীবন গড়ার উৎসাহ প্রদানকল্পে বিভিন্ন ¯‥ুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে তিনি প্রবর্তন করলেন ‘এশায়াত সেমিনার’। যার ফলশ্র‚তিতে হাজার হাজার ছাত্র ও যুব সমাজ এ কমিটির আশ্রয়ে এসে ক্সনতিক চরিত্রে চরিত্রবান হয়ে নতুন প্রজন্মের জন্য ‘উজ্জল দৃষ্টান্ত’ হয়ে আছে। গ) এশায়াত মাহফিলঃ গ্রাম থেকে গ্রাম, পল­ী থেকে পল­ী কোরআন সুন্নাহর বয়ান, শরীয়তের অনুসরণ, তরিক্বতের অনুশীলন ও মানবতার শিক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে তিনি প্রবর্তন করলেন গ্রাম ভিত্তিক ‘এশায়াত মাহফিল’, যা বাংলাদেশের আটষট্টিহাজার গ্রামে পে․ঁছিয়ে দেয়ার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যা‛েছন। ঘ) এশায়াত সম্মেলন ও গাউছুল আজম কনফারেন্সঃ ঐতিহাসিক মহান বিদায় হজ্বে আরাফাতের ময়দানে প্রিয় নবী ছাল-াল-াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামা বিদায়ী যে ভাষণ পেশ করেছিলেন তা মুসলিম বিশ্বের জন্য পরিণত হয়েছে সম্মিলিত ভাবে দ্বীনের দাওয়াত প্রদানের এক শাশ্বত সোনালী মডেল। তাই নগর থেকে নগর, জেলা থেকে জেলা, বিভাগ থেকে বিভাগ এবং দেশ থেকে দেশান্তরে এ তরিক্বতের সোনালী শাশ্বত আধ্যাত্মিক কর্মপদ্ধতির সুখবর মুসলিম মিল­াতের ঘরে ঘরে পে․ছানোর লক্ষ্যে আয়োজন করা হয় জশ্নে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামা, এশায়াত সম্মেলন ও গাউছুল আজম কনফারেন্স। যা বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে আরব আমিরাত, ইউরোপসহ বহির্বিশ্বের জমিনকে স্পর্শ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ইন্শা’ল­াহ ২৮শে জানুয়ারী শনিবার স্বাধীন বাংলার রাজধানী ঢাকা, পল্টনের ঐতিহাসিক বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ চত্বরে অনুষ্ঠিত হ‛েছ জশ্নে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী ছাল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামা উপলক্ষে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলন। মুনিরীয়া তরিক্বত এ মহান মনিষী মানবজাতিকে শরীয়তের ক্ষেত্রে আত্মমর্যাদা ও সতর্কতার শিক্ষা, পরম মানবতা ও বিনয়ের দীক্ষা এবং রূহানী ফযিলত লাভের পথ সুগম করার নিমিত্তে প্রবর্তন করলেন সুন্নত তরিকার উপর প্রতিষ্ঠিত ‘মুনিরীয়া তরিক্বত’। কোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক ক্সবশিষ্ট্যে ভরা এ মহান তরিক্বত মানুষকে আল­াহর পূর্ণ অনুসরণ, অনুকরণ ও আল­াহ প্রেম ও নবী প্রেমে নিজেকে সপে দেয়ার ক্ষেত্রে রূহানী সমস্ত পথ অতিক্রম করার বাস্তবধর্মী শিক্ষা দেয়। ক) অজীফা শরীফঃ কোন মুসলিম নর-নারী, যুবক-যুবতী, ছাত্র-ছাত্রী এ তরিক্বতে দীক্ষিত হলে শরীয়তের পথ নির্দেশনা অনুযায়ী ক্সদনন্দিন ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ আমল পালনের পর অতিরিক্ত কিছু নফল এবাদাত করতে হয়। সেগুলোকে তরিক্বতের ভাষায় ‘অজীফা শরীফ’ বলা হয়। যেমন-বাদে নামাজে মাগরিব ফাতেহা শরীফ, বাদে নামাজে এশা দরূদ শরীফ, বাদে নামাজে ফজর খতম শরীফ। আর সর্বক্ষেত্রে ঈছালে ছাওয়াবের কেন্দ্রবিন্দু রাসূলে খোদা ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামা’র রূহ শরীফ। খ) তাওয়াজ্জুহ-এর ব্যবস্থাপনাঃ পবিত্র কোরআনের অমীয় বাণী-‘আমি মানুষকে সবচেয়ে সুন্দরতম অবয়ব দিয়ে সৃষ্টি করেছি’। এ সুন্দর অবয়বের উপাদান চারটি জিনিষ তথা- আগুন, পানি, মাটি ও বাতাস। এ উপাদানের প্রভাবে মানুষের মধ্যে আটটি দোষ পরিলক্ষিত হয়। যেমন-ক্রোধ, প্রতিশোধ পরায়ণ, হিংসাবিদ্বেষ, অ‣ধর্য্য, উ‛ছৃংখলতা, কৃপণতা, নির্লজ্জ, অ‣নসলামিক বিনোদন। এগুলো যেমনভাবে মানুষের বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে অপরাধী করে তোলে তেমনি মানুষের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ তথা ক্বলব, রূহ, ছির ইত্যাদিকে কলুষিত করে দেয়। যার ফলে মানুষের মধ্যে ‣নতিক চরিত্রের অবক্ষয় ঘটে। তাই এ মহান তরিক্বতে দীক্ষিত হলে প্রথমে তিন মাস অজীফা শরীফ আদায় করে, নির্দিষ্ট দিনে ছালাতুত তাওবা পড়ে পুর‚ষ হলে মহান মোর্শেদ গাউছুল আজমের সামনা-সামনি আর মহিলা হলে পৃথিবীর যে কোন স্থানে বসলে গাউছুল আজম তরিক্বতের নির্দিষ্ট নিয়মে তার ক্বলব, রূহ ছির ইত্যাদি লতিফায় তাওয়াজ্জুহ প্রদান করেন। যার ফলে একজন মানুষ বাহ্যিক সুন্দর চরিত্র এবং অভ্যন্তরীণ পূতঃপবিত্র ক্বলবের অধিকারী হয়ে নিজেকে একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলতে সক্ষম হন। গ) মোরাকাবাঃ আল­াহর ধ্যানে মগ্ন, পৃথিবীর যাবতীয় কিছু থেকে ধ্যান-ধারণাকে ছিন্ন-বি‛িছন্ন করে ক্বলবে আল­াহর সৃষ্টিজগত নিয়ে চিন্তা গবেষণা করে একাগ্রচিত্তে আল­াহর দিকে মনোনিবেশ করাকে তরিক্বতের ভাষায় ‘মোরাকাবা’ বলা হয়। আর হাদীসের ভাষায় তাফাক্কুর বলা হয়। যেমন-হাদীসে পাকের বাণী- ‘কিছুক্ষণ তাফাক্কুর তথা মোরাকাবা করা ষাট বছর নফল এবাদাতের চেয়ে উত্তম’। ঘ) ফয়জে কোরআনঃ পবিত্র কোরআন আল­াহ তায়ালার পাক কালাম। মানবজাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সংবিধান, যাতে রয়েছে সবকিছুর সুস্পষ্ট বয়ান। গবেষণা করলে দেখা যায়, এ কোরআনে পাক চারটি জিনিসে গাঁথা। ১) নুকুশে কোরআন ২) হরোফে কোরআন ৩) মা’নায়ে কোরআন ৪) ফয়জে কোরআন। খলীফায়ে রাসূল (দ:), আমির‚ল মো’মেনিন, হযরত ফার‚কে আজম ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ) তাঁর বোনের জবানে ‘সূরায়ে তোয়াহা শরীফ’ শুনে যে প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে প্রিয় রাসূল ছল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামার দরবারে গিয়ে কলমা শরীফ পাঠ করেছিলেন সে প্রভাবই হল ‘ফয়জে কোরআন’। আল­াহ পাকের বাণীনিশ্চয়ই মো’মেন হলেন যখন তাদের সামনে আল­াহকে স্মরণ করা হয় তখন তাদের ক্বলব প্রকম্পিত হয়। আর যখন আল­াহর আয়াত সমূহ তেলাওয়াত করা হয় তখন তাদের ঈমানী চেতনা বৃদ্ধি পায়। ঙ) ওয়াজদঃ আল­াহ তায়ালার কুদরতি দৃষ্টি ও তজল­ী পেয়ে, কোরআন, হাদীস ও শানে রেছালত শুনে আল-াহ-নবী প্রেমে আত্মহারা তথা কান্নার র‚ল ভেসে উঠা, লোম শিহরিত হওয়া, ইন্দ্রিয় অনুভূতি হারিয়ে ফেলাকে তরিক্বতের পরিভাষায় ‘ওয়াজদ’ বলা হয়। কোরআনে পাক স্বাক্ষ্য বহন করে যে, তূর পর্বতে আল­াহর তজল­ী পেয়ে ‣ছয়্যদুনা হযরত মুছা (আঃ) অচেতন হয়ে পড়ে গিয়ে ছিলেন। আজ কঠিন যুগেও সে ওয়াজদ এ তরিক্বতে বিদ্যমান। চ) অধিক দরূদ শরীফঃ মোরাকাবা-মোশাহাদা, ছালাতুত তাহাজ্জুদ, তসবিহ, এশরাক ও তাওবা, মিসওয়াক, ঢিলা-কুলুখ, দাড়ি ও পাগড়ী এবং অভ্যন্তরীণ লতায়েফ জারির পাশাপাশি অধিক দরূদ পাঠ এ মহান তরিক্বতের অনন্য একটি ‣বশিষ্ট্য। এ মহান তরিক্বতের অনুসারীগণকে ক্সদনিক এগারশত এগার বার দরূদে মোস্তফা (দঃ) পড়তে হয়। তৎমধ্যে বাদে নামাজে ফজর দুইশত বার দরূদে উম্মি, বাদে নামাজে মাগরিব এগার বার এবং বাদে নামাজে এশা নয়শত বার দরূদে এস্তেগাছা অর্থাৎ ‘ছল-াল-াহু আলাইকা এয়া মুহাম্মাদু’। প্রিয় রাসুল ছল-াল-াহু আলাইহি ওয়া সাল-ামা’র বাণী-যে আমার উপর ক্সদনিক এক হাজার বার দরূদ পড়বে সে জান্নাতে তার ঠিকানা দেখেই মৃত্যুবরণ করবে। জনহিতকর অবদান এ মহান মনিষী ধর্মীয় অবদানের পাশাপাশি দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর জন্য অনেক জনহিতকর কাজ করেছেন এবং করছেন। যেমনক) কাগতিয়া এশা’তুল উলুম কামিল এম. এ. মাদ্রাসাঃ এ মহান মনিষীর সম্মানিত শাশুর যুগশ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বীন, আল­ামা হযরত শায়খ ‣ছয়্যদ র‚হুল আমিন (রাঃ) ১৯৩২ সালে এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি স্থাপন করে আলিম স্তর পর্যন্ত উন্নীত করেন। এ প্রতিষ্ঠানকে মহান মোর্শেদ আওলাদে মোস্তফা, খলীফায়ে রাসূল (দঃ), হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ গাউছুল আজমের হাতে সপে দেয়ার পর ধীরে ধীরে ফাযিল, কামিল (এম.এ) এবং স্বাধীন বাংলার ইতিহাসে মাদ্রাসা জগতে সর্বপ্রথম চালু হওয়া ফাযিল অনার্স কোর্স, আধুনিক মানের লাইব্রেরী, অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, প্রশাসনিক, একাডেমিক ও আবাসিক ভবন, সিম্পোজিয়াম কক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানের মাদ্রাসা ময়দান ইত্যাদি তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম, অবর্ণনীয় মেহনত ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফসল। খ) কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম মহানগরঃ অক্লান্ত সাধনার মাধ্যমে এ মহান মনিষী চট্টগ্রাম মহানগরে প্রতিষ্ঠা করেছেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ কমপ্লেক্স। যার অধীনে ইতোমধ্যে চালু হয়েছে আল-ফজল মুনিরী গাউছুল আজম হিফজুল কোরআন, ভিত্তি প্রস্তর করা হয়েছে আলফজল মুনিরী গাউছুল আজম আহমদীয়া জামেয়া সুন্নিয়া মাদরাসা। আর অদূর ভবিষ্যতে ইন্শা’ল­াহ আন্তর্জাতিক মানের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় পর্যায়ের একটি জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। গ) তবলীগ কার্যালয় প্রতিষ্ঠাঃ এ মহান মনিষীর প্রতিষ্ঠিত মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের অধীনে শতাধিক কার্যালয় রয়েছে। যেখানে এ দেশের যুব সমাজ মোরাকাবা, জিকির, রেয়াজতসহ শরীয়ত-তরিক্বতের অনুশীলন করে থাকেন। এমনকি কানাডার মত পাশ্চাত্য সং¯‥ৃতির দেশে এ কমিটির অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আল-ফজল মুনিরী গাউছুল আজম জামে মসজিদ। ঘ) হিফজুল কোরআন প্রতিষ্ঠাঃ মুসলিম সন্তানকে সহীহ-শুদ্ধভাবে আল­াহর পাক কালাম কোরআনে করিম শিক্ষা দেয়ার জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন একাধিক হিফজুল কোরআন প্রতিষ্ঠান। তৎমধ্যে আল-ফজল মুনিরী গাউছুল আজম হিফজুল কোরআন বিভাগ রাউজান, চট্টগ্রাম; আল-ফজল মুনিরী গাউছুল আজম তাহফিজুল কোরআন, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম এবং আল-ফজল মুনিরী গাউছুল আজম হিফজুল কোরআন বিভাগ, টরেন্টো, কানাডা, উলে­খযোগ্য। ঙ) রচিত কিতাবাদিঃ এ মহান মনিষীর সম্পাদনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় রচিত হয়েছে শরীয়ত ও তরিক্বতভিত্তিক অনেক কিতাব। তৎমধ্যে প্রকাশিত পুস্তকাদি হলো ঃ ১) তোহ্ফায়ে আহ্মদী ২) ক্সত্রমাসিক ফজলে আহমদী ৩) কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের তরিক্বত, আল­াহ প্রাপ্তির সহজ পথ ৪) মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ৫) এশায়াত কি ও কেন? ৬) এইতো হেরার নূর পূর্ণাঙ্গ বিধান মুকুর ৭) কাগতিয়ার সেই মহান মোর্শেদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল­ুহুল আলী ৮) মনোগ্রামে ছিরাতুল মোস্তাকিম ৯) মুক্তির পয়গাম ১০) বাগে আহমদী ১১) যুগে যুগে গাউছুল আজমের ধারাবাহিকতায় কাগতিয়ার মহান মোর্শেদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল­ুহুল আলী ১২) তরিক্বত জীবন ১৩) রদ্দে এ’লান ১৪) রদ্দে আন-নূর ১৫) যুগে যুগে গাউছুল আজমের আগমন ১৬) মুনির‚ল উছুল ফি এছবাতে খলিফাতির রাসূল (খলীফায়ে রাসূল) ১৭) জমানার বিস্ময়কর তাপস্বী রমণী ১৮) বিশেষ স্মরণিকা’০৯ (১৯) বিশেষ বুলেটিন’০৯ আধ্যাত্মিক ক্ষমতা সকল সৃষ্টির এ বিশ্বাস রয়েছে যে, একমাত্র আল­াহ তায়ালাই সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান। আল­াহ তায়ালা তার বিশেষ বিশেষ বান্দাকে বিশেষ ক্ষমতা দান করেন। যেমন-হযরাতে আম্বিয়া কেরামের ক্ষেত্রে মো’জেযা আর আউলিয়াল­াহর ক্ষেত্রে কারামত। আকাইদবিদগণ একমত পোষণ করেন আল­াহর অলীগণের কারামত হক্ব, সত্য ও বাস্তব। এ সত্য বিষয়কে সামনে রেখে আমাদের মহান মোর্শেদ, আওলাদে মোস্তফা, খলীফায়ে রাসূল (দঃ) হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল­ুহুল আলীর কয়েকটি কারামত পেশ করা হল। ক. মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, পিতা-মরহুম নুর‚ল আলম মাষ্টার, অলিমিয়া হাট, আধার মানিক, রাউজান, চট্টগ্রাম। বর্তমানে ওমানে ম¯ে‥ট-এর হামরিবা প্রবাসী। তিনি বর্ণনা করেন-আমি ১৯৯২ সাল থেকে ম¯ে‥ট প্রবাসী এবং ২০০৪ সাল থেকে সেখানে স্বপরিবারে বসবাস করি। বিগত ১৩-০৯-২০০৮ইং তারিখে আমার একটি মেয়ে সন্তান হয়। মেয়েটি যখন একটু বড় হয় তখন একদিন বেলুন নিয়ে খেলা‛িছলাম। তখন বুঝতে পারলাম যে, মেয়েটি বেলুন দেখতে পা‛েছ না। শুধু একদিকে তাকিয়ে আছে। আমি সময় ক্ষেপন না করে ওমানের বদর আছ-ছামা ক্লিনিকে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে বিষয়টি খুলে বললে তিনি কয়েকটি পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন এবং পরামর্শক্রমে পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট দেখার পর তিনি বললেন- মেয়েটি জন্মান্ধ, জীবনে আর ভাল হবে না। এতে আমি, আমার মা, আমার স্ত্রী এবং আত্মীয় স্বজন সকলে হতাশা ও চিন্তিত হয়ে পড়ি। আমার মা ও আমার স্ত্রী মারাত্মকভাবে ব্যথিত হন। আর আমার স্ত্রী আমার গাউছুল আজমের ক্সত্রমাসিক ম্যাগাজিন ‘ফজলে আহমদী’ তে তাঁর বিভিন্ন কারামত পড়তেন আর কান্নাকাটি করে বলতেন- আমার গাউছুল আজমের এতই কারামত! তিনি কি আমার মেয়ের জন্য দোয়া করতে পারেননা? আমার মেয়ের চক্ষুকে ভাল করে দেয়ার মাধ্যমে আল­াহ কি গাউছিয়্যতের একটি কারামত প্রকাশ করতে পারেননা? গাউছুল আজমের উছিলায় আল­াহ কি আমার মেয়ের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেবে না? এক দিন আমার স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়ল এবং স্বপ্নে গাউছুল আজমকে দেখল। আর ঘুম থেকে উঠে আমাকে বললেন যে, সে স্বপ্নে দেখতে পা‛েছ, আমার বাসায় গাউছুল আজম তশরীফ নিয়েছেন আর আমার স্ত্রীকে বলছেন- তোমার মেয়ের মাথায় দুটি বি‛ছু আছে। আমি দোয়া করছি আল­াহ যেন বি‛ছু দুটি বের করে দেন। এদিকে আমি দেখতে পা‛িছ আমার মেয়ের মাথা থেকে একটি বি‛ছু দ্র‚ত গতিতে অন্যটি ধীরে ধীরে বের হ‛েছ। এ কথা শুনে আমি কাল বিলম্ব না করে আবার ডাক্তারের কাছে আমার মেয়েকে নিয়ে গেলাম। তিনি একটি পরীক্ষা করার পর দেখতে পেলেন যে, আমার মেয়ের চোখ পুরোপুরি সুস্থ। ঐ ডাক্তারকে যখন আমি পূর্বের রিপোর্টগুলো দেখালাম তিনি বললেন এগুলো ছিড়ে ফেলে দাও। আর আমি ও আমার মা যাচাই করে দেখলাম যে, আমার গাউছুল আজমের দোয়ায় আমার মেয়ে পরিপূর্ণ দেখতে পা‛েছ। খ.মুহাম্মদ নাজিম উদ্দীন (প্রকাশ নুর‚ল ইসলাম), পিতা-মরহুম নূর মোহাম্মদ, মাঝিপাড়া, মুহাম্মদপুর, রাউজান, চট্টগ্রাম (ওমান প্রবাসী)। তিনি বর্ণনা করেন, গত ৩১শে আগষ্ট, ২০১১ ইং ঈদুল ফিতরের পরের দিন ওমানের মেজুয়া জবলে আখ্দার-এ তিনি এবং আহমদ ছগির বাবুল স্বপরিবারে গাড়ীযোগে ভ্রমনে যান। ভ্রমন শেষে গাড়ী যোগে জবলে আখ্দার থেকে নামার সময় গাড়ীর ব্রেকফেল হলে আহমদ ছগির বাবুল সকলকে কলমা শরীফ পড়তে বলেন এবং নিশ্চিত দুর্ঘটনা বুঝতে পেরে ভয়ে ড্রাইভিং সিটে হার্টফেল করেন (ইন্নালিল­াহ)। আর গাড়ীটি প্রায় ২২০০ফুট গভীর খাদে খসে পড়ছিল। নাজিম উদ্দীন বলেন, এমতাবস্থায় আমি কলমা শরীফ পড়ছিলাম এবং আমার মোবাইলে মহান মোর্শেদ, আওলাদে মোস্তফা, খলীফায়ে রাসূল (দঃ) এর শানে রচিত কছিদা শরীফ (গজল) চলছিল। গাড়ীটি দুই-একবার উল্টে যেতেই আমি ছিটকে পড়লাম আর গাড়িটি একদিকে ছিটকে পড়ছে। তৎক্ষণাত স্পষ্টভাবে দেখতে পা‛িছ, যেদিকে গাড়িটি ছিটকে পড়ছে ঐ দিকেই মহান মোর্শেদ, আওলাদে মোস্তফা, খলীফায়ে রাসূল (দঃ), হযরত শায়খ ক্সছয়্যদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল­ুহুল আলী ছাহেব হুইল চেয়ারে বসা আছেন। আর গাড়ীর যাত্রীদেরকে বলেছেন, তোমরা এদিকে কোথায় পড়ছ? একথা বলে তিনি গাড়িটি আটকিয়ে দিলে গাড়ীতে থাকা সবাই এমনকি ছোট্ট মেয়েটিও প্রাণে রক্ষা পায়। ছোবহানাল­াহ! গ.অধ্যাপক মুহাম্মদ ফোরকান মিয়া, মহাসচিব, মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ, বর্ণনা করেন যে, তিনি ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে মাষ্টার্স এর পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওনার ষষ্ঠ পত্র পরীক্ষার আগের দিন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের তরিক্বতের মাহফিলে সাংগঠনিক কাজ আঞ্জাম দিতে গিয়ে রাত হয়ে যায়। যার কারণে তিনি অধ্যয়ন করার সুযোগ পাননি। তাই চিন্তিত মনে তার অধ্যয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে পড়লেন। রাত আনুমানিক তিনটার সময় তাহাজ্জুদ নামাজের পূর্বে তিনি স্বপ্নে মহান মোর্শেদ গাউছুল আজমকে দেখতে পা‛েছন এবং তাকে বলছেন, হে ফোরকান! তুমি তো দরবারের কাজ করতে গিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালভাবে নিতে পারনি। তোমার নোটগুলো আমাকে একটু দাওতো। তিনি স্বপ্নের মধ্যে গাউছুল আজমকে তার পার্শ্বে থাকা বুকসেল্ফ থেকে নোট খাতাটি দিলেন আর গাউছুল আজম মার্কিং করে করে বলছেন- তুমি এই এই প্রশ্নগুলো দেখে নিও। সাথে সাথে তার ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং পার্শ্বে থাকা নোট খাতাটি নিয়ে স্বপ্নে দেখা গাউছুল আজমের দেয়া প্রশ্নগুলো চিহ্নিত করে তাহাজ্জুদ পড়ে ভালোভাবে পড়ে নিলেন। সকাল নয়টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে দেখলেন, আল­াহর কি মহীমা! গাউছুল আজমের মার্কিং করা সব প্রশ্ন হুবহু প্রশ্ন পত্রে বিদ্যমান। আহবান আসুন একবার এ মহান মনিষীর তরিক্বত নিয়ে গবেষণা করি। ২৮শে জানুয়ারী, শনিবার, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ চত্বর, ঢাকার ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে কোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক জীবন গড়ি এবং তাঁর হায়াতে খিজরীয়া কামনা করি আমিন! বেহুরমতে ক্সছয়্যদিল মুরছালিন।

No comments

Powered by Blogger.